Breaking News

ব্রেস্ট স্যাগিং বা ঝুলে পড়া প্রতিরোধের উপায়



ব্রেস্ট স্যাগিং খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। এদেশের বেশিরভাগ মহিলাই এই সমস্যার মুখোমুখি হন। নানা কারণে এই স্যাগিং হয়। তবে এই বিষয়ে সচেতন থাকলে এবং দৈনন্দিন জীবনে কিছু জিনিস মেনে চললে, এই সমস্যার মোকাবিলা করা যায়।





মাসাজ
স্যাগিং আটকাতে নানা ধরনের মাসাজ রয়েছে। অয়েল মাসাজের মধ্যে পড়ে অলিভ অয়েল, কোকোনাট অয়েল, স্পিয়ারমিন্ট অয়েল ইত্যাদি। এছাড়া স্যাগিং প্রতিরোধে সবচেয়ে ভাল আইস মাসাজ। কয়েকটি আইস কিউব নিয়ে স্তনের চারপাশে বৃত্তাকারভাবে মাসাজ করুন অথবা একটি জিপলক ব্যাগে কুচো বরফ নিয়ে এইভাবে মাসাজ করুন। সপ্তাহে দু’তিনবার এই মাসাজ করতে হবে। এতে স্তনের আশপাশের কোষে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও স্তনের শেপ সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।




ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
দেহের একটি নির্দিষ্ট ওজন বজায় রাখুন। ক্রমাগত মোটা এবং রোগা হলে, ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে যায়, যা ব্রেস্ট স্যাগিং ত্বরান্বিত করে।




প্রচুর পানি খান
ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখার প্রধান উপায় শরীরের প্রচুর পরিমাণ পানিের সরবরাহ। দিনে অন্তত ৪ লিটার পানি খান। তার বেশি খেতে পারলে তো কথাই নেই।




খারাপ অন্তর্বাস
ব্রা-এর শেপ, ফিটিং এবং সাইজের উপরও নির্ভর করে স্যাগিং। দীর্ঘদিন ধরে ঠিক সাইজের ব্রা না-পরলে, ফিটিংস আলগা হলে বা কাপ সাইজ ঠিকঠাক না-হলে স্যাগিং হয়। তাই অন্তর্বাস কেনার সময় সতর্ক থাকুন। ভাল ব্র্যান্ডের প্যাডেড ব্রা পরা ভাল আর যাঁদের ইতিমধ্যেই স্যাগিং হওয়া শুরু হয়েছে তাঁদের আন্ডারওয়্যার ব্রা পরা উচিত।





প্রোটিন খান বেশি করে
শরীরে প্রোটিনের পরিমাণ কম থাকলে বুকের চারপাশের মাংসপেশিগুলি আলগা হতে থাকে। তাই রোজ অন্তত ১০০ গ্রাম প্রোটিন খেতে হবে। কোনও বিশেষ রোগ থাকলে, কী ধরনের প্রোটিন খাবেন, তা নিয়ে ডায়টিশিয়ানের পরামর্শ নিন।





বেদানার রস
অ্যান্টি-এজিংয়ে সবচেয়ে উপকারী ফল বেদানা। রস করে খাওয়াই ভাল কারণ বেদানার বীজ থেকে নিঃসৃত তেলে যে ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস থাকে তা স্তনকে আঁটোসাঁটো রাখতে সাহায্য করে।




ব্রেস্ট ফার্মিং এক্সারসাইজ
বেশ কিছু সাধারণ এক্সারসাইজ রয়েছে যা নিয়মিত করলে স্যাগিং প্রতিরোধ করা সম্ভব। সবচেয়ে সহজ হল পুশ-আপ। তা ছাড়া রয়েছে চেস্ট প্রেস, ডাম্বল ফ্লাইস, টি-প্লাঙ্কস, এলবো স্কুইজ ইত্যাদি। প্রত্যেকটিই প্রতিদিন আট-দশবার করলেই যথেষ্ট। আর যদি ডাম্বেল না থাকে, তবে অন্য কোনও ভারি জিনিস নিয়ে করতে পারেন এক্সারসাইজ।





ধূমপান ও অতিরিক্ত ট্যানিং
ধূমপানের ফলে স্যাগিং হয় এটা অনেকেই জানেন না। মহিলাদের ধূমপান করতে বারণ করার পিছনে এ-ও একটি বড় কারণ। তা ছাড়া অতিরিক্ত সান-ট্যানিং করলেও স্যাগিং হয়।



ব্রেস্ট মাস্ক
ফেশিয়ালের মতোই হল এই মাস্ক যা সপ্তাহে একবার করা উচিত স্যাগিং রোধে। ১ টেবিলচামচ টক দই, ১ টেবিলচামচ ভিটামিন-ই অয়েল এবং ১টি ডিম ফেটিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি স্তন এবং স্তনের চারপাশে মাখিয়ে আধ ঘণ্টা রেখে দিন। তার পর ঠান্ডা পানিে ধুয়ে নিন।





ব্রা-হীন
ফ্রান্সের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জাঁ-ডেনিস রইলোঁ ১৮ থেকে ৩৫, বিভিন্ন বয়সের প্রায় ৩০০ জন মহিলার স্তন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার বক্তব্য, দীর্ঘক্ষণ ব্রা পরে থাকলে মহিলাদের শারীরিক ক্ষতিই হয়। তার গবেষণা বলছে, যে সব মহিলারা দীর্ঘ কয়েক বছর ব্রা না-পরে থেকেছেন, তাদের স্তনবৃন্ত উন্নত হয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি এ-ও বলেছেন যে, তা বলে ব্রা পরা একেবারেই ত্যাগ করা যায় না।





ব্রেস্ট স্যাগিং
মেয়েদের শরীর নানা পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যায় এবং এক একটি পর্যায়ে স্তনের আকার-আয়তন একেক রকম থাকে। কিন্তু মেয়েদের লাইফস্টাইলের জন্যেও স্তনের আকারে বদল আসতে পারে।
পিরিয়ডের দুটি পর্যায় থাকে— ফলিকিউলার ও লিউটিয়াল। একটি পিরিয়ড শেষ হওয়ার ঠিক পরের পাঁচ-সাতদিন, মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা অনেক কমে যায়। মাসের এই সময়টায় স্তনের ওজন সবচেয়ে কম থাকে।
লিউটিয়াল পর্যায়ে অর্থাৎ পিরিয়ড হওয়ার ঠিক আগে আগে, স্তনে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রাও বাড়ে। ফলস্বরূপ এই সময়ে স্তন অনেকটা বেশি ভারী লাগে।
গর্ভধারণের সময়ে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন দেখা যায় স্তনে। স্তন্যদানের জন্য এই সময় প্রকৃতি শরীরকে তৈরি করে। এ সময় স্তনের আকার-আয়তন তো বাড়েই, দুগ্ধগ্রন্থি সক্রিয় হওয়ায় স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ভারীও হয়ে যায় স্তন।




যৌনতার সময়েও স্তন স্ফীত হয়। যৌন উত্তেজনার ফলে রক্তচাপ এবং হার্ট রেট দুই’ই বাড়ে। এর ফলে স্তন স্ফীত হয় ও স্তনের শিরাগুলি আরো বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
মেনোপজের পরে শরীরে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ অনেক কমে যায়। তাই এই সময়ে স্তনের কাপ সাইজ কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আদতে তা হয় না। দেখা গেছে, বরং হরমোনের মাত্রার পরিবর্তনের ফলে শরীরের মাঝামাঝি অংশে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে থাকে। ফলে স্তনও ভারী হয়।
গর্ভনিরোধক পিলে ইস্ট্রোজেন থাকে। যারা নিয়মিত এই পিল খান, তাদের স্তনের আকার-আয়তন দুটিই অনেকটা বেড়ে যায়।





বেশ কিছু এক্সারসাইজ রয়েছে যা নিয়মিত করলে স্তনের কাপ সাইজ বেড়ে যায়। তবে তা ছাড়া সাধারণ ফ্রি-হ্যান্ডে খুব একটা পরিবর্তন হয় না স্তনের আকারের।কিছু কিছু ডিপ্রেশনের ওষুধ রয়েছে যা দীর্ঘদিন ধরে খেলে স্তন ফুলে যায় এবং অনেক সময়ে ব্যথাও হতে পারে।
কারো কারো স্তনবৃন্ত থেকে দুধের মতো ক্ষরণও হয়। এই সময় স্বাভাবিকভাবেই স্তনের আয়তন বাড়ে। তবে ওষুধ বন্ধ করে দিলে স্তনের আয়তন আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়।
যৌনতার সময়ে খুব বেশি স্তনমর্দনেও স্তনের আয়তন বেড়ে যায়। অনেক সময়ে এই কারণে অল্পবয়সী নারীদের মধ্যেও ব্রেস্ট স্যাগিংয়ের সমস্যা দেখা যায়।




যে কোনো ব্রেস্ট ইমপ্লান্ট সার্জারির মাধ্যমে স্তনের আকার বাড়ানো যায়। আবার কিছু আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে মাসাজের মাধ্যমেও বাড়ানো যায় স্তনের আকার-আয়তন, তবে তা সময়সাপেক্ষ। এছাড়া ব্রেস্ট বড় করার জন্য ব্রেস্ট ইমপ্লান্ট সার্জারী রয়েছে। এটি ন্যাচারাল নয় বলে না করাই ভালো এবং এ পদ্বতিটি ব্যয়বহুল।

No comments